মঙ্গলবার, ২৬ জুন, ২০১২

বিষণ্ণতার মাঝখানে দেয়াল থাকেনা


বিষণ্ণতার মাঝখানে দেয়াল থাকেনা
বিষণ্ণরা আদিগন্ত, অ-মাপা প্রান্তর পেরিয়ে সীমানা ছাড়িয়ে যায়
বর্ষার আসন্ন জলমগ্নতা কোথায় কোথায় পৌছাতে পারবে
খা খা রোদ্দুর ধু ধু খরায় চৌচির বুকের জমিন; অতলান্ত রুগ্নতায়
জীর্ণ শীর্ণ কঙ্কালসার অস্থি মজ্জায় বিষণ্ণতার মরীচিকা ঝেঁকে বসেছে
হৃদয়ের খিস্তি শীৎকারে দুর্নিবার মাতম বাজে
বৃষালী গোখরোর নির্দয় ছোবালে রক্ত-নীল হারানো লালিমা খোঁজে।
আত্মা থেকে পরমাত্মায় যোজন যোজন দূরত্ব
অগুনতি শর্ত আর ক্ষীণ অবিশ্বাসের বিস্তীর্ণ দেয়াল
চৌদিক থেকে সহস্র চক্ষু প্রশ্নাতীর তাক করে আছে
বিদীর্ণ বুকের চাতালে কড়মড় করে কম্পন তুলে অচিন বেদনা
তাবৎ জঘন্ন্যতা মাথায় নিয়ে আমিও একটি প্রশ্নের তীর ছুঁড়ি
“ নৃশংসতাকে নগ্ন করতে চাও না নগ্নতাকে নৃশংস”?
বাঁচার জন্য বলছিনা
মৃত্যুর বিচ্ছিন্ন হীনম্মন্যতা জানার জন্যই প্রশ্নটি করলাম।

বর্ষার মৌমিত উৎকর্ষ



অবশেষে রাতের বুক চিরে নামলো বর্ষণধারা
তীব্র ভস্মতায় এবার সুখের শীতল ছোঁয়া লাগুক
খুলে দাও জানালার কপাট তুলে দাও ভারী পর্দা
ঝিরি ঝিরি হাওয়ায় ফিরে আসুক আধরা মাধুকরী
খুলে দাও চুলের বাঁধন মেলে দাও গোপন সমীরণ
মুক্ত গগনের উন্মুক্ত আন্দোলনের হোক সফল বিচরণ
অঞ্জলি পেতে বরণ কর
বুভুক্ষুর যত্তো ক্ষুধা আজ হোক নিবারণ
আমাকেও সিক্ত কর
রিক্তের আড়ালে আসতে দাও প্রবণের হর্ষ
মৌমিত উৎকর্ষে ডুবে যেতে দাও
লুটে যাক সকল জলাঞ্জলির মোহ
মিটে যাক দীর্ঘশ্বাসের অতলে চাপা বিরহ
ছুটে যাক চেতনার সুতীব্র প্রাঞ্জলতা
অনিন্দ্য আবহে জীবনের রান্ধ্রে রান্ধ্রে পৌঁছে যাক মমতা।

জমি বুঝে জলজ ভাষা


বৃষ্টি আর ঝর্না দুটোই ধারাপাত ধর্মী
পার্থক্য কেবল এক জন পতিত হয় নিরবধি
আরেক জন গলে কেবল মেঘেরা হাত পাতে যদি
নিজস্ব ভাষায় শীৎকারে দুটোই সুরের প্রেমী।
পতিত জমি বুঝে জলজ ভাষা
চির যৌবনা খনিজ উত্তাপে ঝর্নার অনিন্দ্য প্রেম লীলা
সুর ছন্দে প্রেমজ সন্তর্পণে চির স্নিগ্ধ বৃষ্টির চলা কলা।
ঝর্না চায় দুরন্তপনা বুকের গভীরে অদম্য উচ্ছ্বাস
নির্জনতা ভেদ করে কান্নার জলে রচনা করে স্বপ্ন-বিন্যাস
বৃষ্টি মগ্নতায় বিগলিত মেঘেরা বিচরণ করে বৃক্ষ লতা ভূমির অভ্যন্তরে
নিখাদ আলিঙ্গনে নির্বিঘ্ন সঙ্গমে নির্গমন করে অতলান্তিক উষ্ণতায়
জলজ ভাষার পরিভেদে আজ একাত্ম ঝর্না আর বৃষ্টি
প্রমত্ত প্রবণে অনন্তপানে ছুটছে অবিরাম
দৃষ্টি নন্দন বিরল স্রোতে আমিও ভাসিয়ে দিলাম-
হৃদয় খসা দু’টো সবুজ পাতা।

নিষ্কণ্টক ভালোবাসা


আমি আর যাই হই কারো অপেক্ষার অস্বস্তি হতে পারিনা
চোখের নির্ঘুম চটপট হতে পারিনা
সম্যক সাধনার পরেই আমি নিজেকে গড়েছি অল্প অল্প
প্রেমাঞ্জলীতে তাহার সঙ্গেই গড়েছি সম্যক্‌সঙ্কল্প।
বেদনার চির নীলে আমি সলেছি আপন অশ্রুজল
তিলে তিলে সাধনার সমূলে দেখেছি তীব্র অনল
দূর্বার নির্বাণে জ্বলে পুড়ে হয়েছি অঙ্গার
প্রেমের নির্মল কাননে আজ তাই ফুটে ফুল নিরহংকার।
উসুলের শূলে কারো দীর্ঘশ্বাস হতে পারিনা
লাভ লোকসান ভুলে বিশ্বাসের নাটাই হাতে ছেড়ে দিই উন্মুক্ত-কাশে
পৃথিবী ঘুরে সে আসবে ফিরে আমার ভালোবাসার নিষ্কণ্টক উচ্ছ্বাসে।