বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬

সময় গেলে সাধন হবেনা......


সময় গেলে সাধন হবেনা......
-----------------------------
দেখতে দেখতে কেটে গেছে বেলা।
বেলা কেটে যায়
এই ত সে দিনের কথা -
মায়ের হাতে গোসল,মায়ের হাতেই খাবার।
সেই হাতেই আদর শাসন আবার সেই হাতেই পথ প্রদর্শন।
পান থেকে চুন খসলেই তুলকালাম কাণ্ড বেঁধে কত দাবী আবদার
যখন- তখন। মায়ের হাতেই আদর শাসন।
সেই শৈশব এখনো রোদ্র উজ্জ্বল বালুর মতন চোখের বিভা হয়ে আছে,
দেহ বস্ত্রে এখনো লেপটে আছে
টোকা দিলেই উড়বে বালুকাময় শৈশব।

সময় গেলে সাধন হবেনা...... অথচ- জীবন তার প্রয়োজনে বড় হয়,
মানুষ নিজেই বুঝতে পারে না -
তারই শৈশব তারই যৌবন-তাকে তাড়া করতে করতে অদ্ভুত শূণ্যতার দিকে নিয়ে যায় ।
সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে বেড়ে উঠায় যারা সফল হয়েছে আমি  তাদের বিনম্র স্যালুট জানাই,
কারণ ব্যর্থ'রা জানে -
সফল হবার মোক্ষম সময় গুলো কে অবমূল্যায়ন করলে জীবনের উপর কেমন গ্লানি নেমে আসে।
সময় গেলে সাধন হবে না......
সময় ত বসে থাকে না
চলে যায়। সময়ের মৃদু  টোকা সবার জীবনেই বাজে,
আমার মত গাফেলেরা তা শুনতে ব্যর্থ অথবা শুনেও তার যথাযথ মূল্যায়ন করেনা।

প্রতি দিন ভাবি আজ ভাল কিছু করব।
ভাল কিছু করার সাধ নিয়ে প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে... জেগে উঠি...পা বাড়াই
কিন্তু সারা দিনের পর যখন ধূমায়িত চায়ের কাপে একাকী সান্ধ্য ,
বাহিরে আকাশে জোছনা স্নিগ্ধ কুয়াশার ঝাঁক, 
চেম্বারের কাঁচের জানালাটা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকি, মনে অনুভব করি অচিন সুদূরের ডাক।
কোথাও কিছু ঘটছে ... আমি জানি না।
শরীরের এক এক টা অঙ্গে একেক ভাষা , একেক ভাষার একেক আবেদন;
মনের গহীনে ধূম্রজালের মত তাল গোল পাকায় অজানা এক আশংকা!
ইথারের ভাষা আমি বুঝি
এখন আর কোন কিছু বুঝতে অক্ষম নই।
উভয় অক্ষের ঝাপসা চাহনি আর বোধের অনুতাপে ভিজে উঠা কার্নিশ
আমাকে প্রিয়জন দের মুখোমুখি করে দেয়
আমি পরাজিত , জন্মান্ধ কবির মত মনের অতলে লুকাতে চেষ্টা করি।
তা কি সম্ভব?
জন্মের দায়
জন্মানোর দায়
স্বপ্নের দায়... কট্টর পাওনাদারের মত রক্ত চক্ষু তাক করে থাকে।
পালাবার পথ নাই; আর অনুধাবন করি - "সময় গেলে সাধন হবেনা"......

জীবনের কাছে আমি কখনোই দূষ্পাপ্য কিছু চাইনি, সুযোগ ছিল
আর দশ জন মানুষের মতন প্রলুব্ধতার মাঝে মত্ত হয়ে অট্টালিকা সমান প্রতিপত্তি অর্জন করার।
অসংখ্য প থ চেনা-জানা , অসংখ্য  সুযোগ  অসংখ্য  বার উপেক্ষা করে আমি আমার মতন
আপন সত্ত্বায় বিলীন হয়েছি কেবল......
নিজের মধ্যে  নিজেকে খুঁজেছি
রাতের পর রাত , দিনের পর দিন বছরের পর বছর আত্মিক ধ্যানে আত্ম সাধনে নিজের সঙ্গে নিজে
লড়েছি, মনের সেই জায়গায় যাওয়াটাই আমার মতে বেশি প্রয়োজন।
আমি জানি যে আমি মাঠে ঘাটে যুদ্ধ করতে পারব না।
এ পথটা সমাধানের পথ নয় , শান্তির নয়, মহা মানবের নয়, প্রেমিকের নয়;
কাজেই আমি তার মধ্যে যাব না।
ঈর্ষা বা ঘৃণা ও মারামারি হানাহানি করতে পারব না দেখতে পারব  না।
তার জন্যই আমার সংগ্রাম। এই শান্তির কথা বলাটাও একটা সংগ্রাম মনে করেছি চিরকাল।
তবুও বুঝি এ সময় সঠিক সময় নয়। সঠিক সময় ফেরিয়ে গেছে অবজ্ঞার বেড়াজালে,
ফেরিয়ে গেছে ... ভেসে গেছে দুর্মর স্রোতে...


মানুষ তো বটেই!
পৃথিবীর প্রতিটি জিব জন্তু, কীট পতঙ্গের ও আত্মা আছে,
প্রেম আছে, ভালোবাসা আছে, স্বপ্ন আর আদর্শ আছে;
প্রতিটি ধূলিকণার ভেতরেও আছে আত্মা-
তাই পাথর হয়ত বা কেবল পাথরই কিন্তু এখানে সে মানুষের প্রতিভূ।
আমি দেখেছি  সেই বস্তুটির ওপরে যখন আলো এসে পড়েছে
তখন মনে হয়েছ সেই পাথর ও  উত্তরণের দিকে যাত্রার  চেষ্টা করেছে,
আমি সেই পাথর থেকে -
শিখেছি নিজের অন্তর কে কি করে ফুলের বাগিচা করতে হয়,
কি করে  চোখের জলে ক্ষান্ত করতে হয় তৃষ্ণার্ত হৃদয়।

এই কথা সত্যি যে-
মাঝে মধ্যে বা বেশীর ভাগ সময় নিঃসহায় নিঃসম্বল একজন মানুষ মনে হয়।
তখন চোখের সামনে নিজের কবিতা আর আদর্শরা বন্ধুর মত উপস্থিত হয়।
যে মানুষ টি কে জীবনের সব চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছি, ভালবেসেছি, শ্রদ্ধা করেছি ;
আমি দেখেছি সেই মানুষ টা বাস্তব অর্থে মোহ মত্ত অহংকার লুব্ধ এক জন মানুষ!
তার পরও যাকে আমি ঘৃণা করতে অক্ষম, ভুলে যেতে অক্ষম!

আমার মন ছুটে যেতে চায়,
কাঁদতে কাঁদতে বৃষ্টিতে ভিজে সারারাত আপাদ মস্তক মাতাল হতে চায়। 
চার দেয়ালে সাজানো আসবাব আর রন্ধন শৈলীর ভুরি ভোজন কে যদি সংসার বলা হয়-
 তবে আমি সেই সংসারে বেমানান জড়পদার্থ কেবল।


অদ্ভুত ভাবে মনের ভেতর একটা প্রশান্তি বিচরণ করছে।
আবার বুকের কোনে অবিরাম  একটি যন্ত্রণা দায়ক শীষ উঠেই চলেছে;
মনে হচ্ছে কেঁদে ফেলবো, কিন্তু জানি কাঁদব ন।।
কান্নার জন্য যেই নিকষতা দরকার সে টা আর অবশিষ্ট নাই ।
ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে জীবনটা কত সুন্দর করে গড়ে দেয়, ক্ষত গড়ে দেয়, স্মৃতি গড়ে দেয় ;
কতকিছু অজানা রয়ে যায় আবার কত কিছু জানা হয় ,
......এভাবেই তো জীবন নিজেকে বইয়ে নিয়ে যায় মহা-জীবনের পথে ।
আপন জন কে পর -
আর পর কে আপন করে চিনতে চিনতে মনে মনে ভাবি জীবন কত্তো বিচিত্র!
বিচিত্রতা ঘিরে আছে চার পাশ।

আমার পৃথিবীর সবচেয়ে আপন
 সবচেয়ে কাছের বন্ধু হচ্ছে আমার আপন চোখের জল।
এক মাত্র সে-ই বুঝতে পারে-
মনের কখন তৃষ্ণায় তাঁকে ঝরতে হবে!

আমার আছে জল.................................................
তোমায় তার ভাগ নিতে নয়, তোমায় ডাকছি স্মৃতির কুহকে ভেসে আসা
দীর্ঘশ্বাস থামাতে,
আসবে?
আসবে আমার বিজন পথের নিশীথের সাথী হতে?
মোহন জোছনার সাথে তোমাকে ভাসিয়ে নেব যাবো আমার ফেলে আসা কবিতার খাতায়
যেখানে শব্দরাই এক মাত্র সান্ত্বনা......।।

দা উ দু ল  ই স লা ম ।
১/৯/১৬